সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্পন্সরশিপ প্রোগ্রাম
আল-খায়ের ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে শিশুরাই জাতির ভাবিষ্যৎ। তাই, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে অরফান স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম চালু করে। যাতে করে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়।
কর্মসূচির আওতায় ৩১১ সুবিধাবঞ্চিত শিশুর লেখাপড়াসহ বেড়ে ওঠার সব অনুসঙ্গ নিশ্চিত করা হয়।
হিফজ স্পন্সরশিপ প্রোগ্রাম
আল খায়ের ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের হাফেজ শিশুদের নিয়ে আলাদা কার্যক্রম চালু রয়েছে। সংস্থা এতিম হাফেজদের সুযোগ-সুবিধা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সবসময় নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
৪০৭ জন হাফেজ শিশুর খাদ্যসামগ্রী, শিক্ষা উপকরণ, আর্থিক সহায়তাসহ নানা ধরনের সহযোগীতা সংস্থা থেকে দেয়া হয়। ঢাকা, রাজনগর, কামালগঞ্জ, কুলাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর, নান্দাইল, রাঙ্গুনিয়া, সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, বেলাগঞ্জ, ফেনি সদর, রাজবাড়ি সদর, কক্সবাজার, পটুয়াখালী সদর, তাহিরপুর, বেতাগি, শিবগঞ্জ ও তালায় আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
২০২৩ সালে আল খায়ের ফাউন্ডেশন ৩০০ হাফেজ শিশুদের সহযোগীতা করে। ঢাকা, রাজনগর, কামালগঞ্জ, কুলাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর, নান্দাইল, রাঙ্গুনিয়া, সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, বেলাগঞ্জ, ফেনি সদর, রাজবাড়ি সদর, কক্সবাজার, পটুয়াখালী সদর, তাহিরপুর, বেতাগি, শিবগঞ্জ ও বাউফলের মতো জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল।
গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্প
প্রতিটি মানুষ দিনেশেষে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাথা গোঁজার।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষের এই চাওয়াকে বাস্তব করতে দাতাদের সহযোগিতায় কাজ করছে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ ও তাদের পরিবারদের বাসস্থান গড়ে দেয়ার কাজ করছে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। ইতোমধ্য সারাদেশে পাঁচ শতাধিক দরিদ্র ও অসহায় পরিবারকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। চলমান রয়েছে এই উদ্যোগ।
মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প
মসজিদ নির্মাণ আল খায়ের ফাউন্ডেশনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে।
মসজিদ মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের আশ্রস্থল। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হলেও ধর্মীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার ক্ষেত্রে বরাবরই বৈষম্যের মুখোমুখি হয়।
ধর্ম অন্তপ্রাণ মানুষ তাদের ধর্মচর্চার অধিকার যেন সুনিশ্চিতভাবে পায় সেজন্য আল খায়ের ফাউন্ডেশন প্রতিবছর মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প নিয়ে থাকে।
শুধুমাত্র ২০২২ ও ২০২৩ সালে ৩৫টি মসজিদ নির্মণ করেছে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
২০২২ সালে ফাউন্ডেশনের তরফে ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, বরিশাল, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভিবাজার, হবিগঞ্জ, ঠাঁকুরগাঁও, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও গাইবান্ধায় মোট ২২টি মসজিদ নির্মাণ করা হয় এবং ২০২৩ সালে ফাউন্ডেশনের বিনিয়োগে সিলেট, কক্সবাজার, বরিশাল, মাদারিপুর ও কুমিল্লায় ১৩টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়।
অন্ধ হাফিজদের পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ
আল খায়ের ফাউন্ডেশন অন্ধ হাফেজদের (৫০জন) সহযোগীতা কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের শিক্ষা উপকরণ, সহযোগিতা, আর্থিক প্রণোদনা, খাদ্য সরবরাহ করা হয়। ২০২৩ সালে ঢাকা ও কক্সবাজারের অন্ধ হাফেজ শিশুদের সহযোগীতার মাধ্যমে আমাদের এই নতুন কার্যক্রম শুরু হয়। ভবিষ্যতে এই সহযোগীতা কার্যক্রমের পরিসর আরও বাড়ানোর সদিচ্ছা রয়েছে।
টিউবওয়েল ও ডিপ ঠিউবওয়েল স্থাপন
আল খায়ের ফাউন্ডেশন দেশব্যাপী নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে।
২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট, রাজবাড়ি, মাগুরা, কক্সবাজার, খুলনা, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জে বিভিন্ন সময় নিরাপদ পানি বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করেছে।
২০২২ সালে ২৭টি হ্যান্ডপাম্প, ১৯টি গভীর নলকূপ এবং ৩২৪টি নলকূপ, স্থাপন করেছে।
ওয়ান পাউন্ড হসপিটাল নির্মাণ
দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সিলেটের বিশ্বনাথে কাজ শুরু করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ওয়ান পাউন্ড হসপিটাল।
চিকিৎসা কেন্দ্রে বর্তমানে ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক চালু রয়েছে। যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ বিনামূল্যে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে।
চোখের ছানি অপারেশন
বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষের চোখের সমস্যাজনিত কারণে চশমা বা অন্য চিকিৎসাসেবা নিতে হয়। দেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এমন নারী ও শিশুর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। তাদের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার জনের চোখে ক্যাটার্যাক্ট রয়েছে।
ক্যাটার্যাক্ট সার্জারি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রত্যন্ত ও গ্রামীন জনপদের অনেকেই চিকিৎসাসেবা পান না। ফলে তাদের আজীবন এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।
এই অভাবগ্রস্ত মানুষের চোখের আলো ফিরিয়ে দেয়ার মহৎ ব্রত নিয়ে আল খায়ের ফাউন্ডেশন প্রত্যন্ত ও গ্রামীন পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য সংস্থার তরফে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে চক্ষুচিকিৎসা ক্যাম্প এবং ক্যাটার্যাক্ট সার্জারি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকে।
ঢাকা, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালি, মৌলভিবাজারসহ দেশের বড় জেলাগুলোয় ১২,২৪৩ অভাবগ্রস্ত মানুষদের ক্যাটার্যাক্ট সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।